কংক্রিটের ফাঁকে ফাঁকে অযত্নে বেড়ে ওঠা
বেয়াড়া সবুজ ধুলায় ধূসর,
নতুন মুকুলে ভরে আছে আমের শাখারা –
তবু ঘ্রাণ ছড়ায় না,
বিদ্যুতের তার জুড়ে সারি বাঁধা কাকের
দৃষ্টিতে আস্তাকুঁড়।
শহরটা মৃত্যু যন্ত্রণায় একই রকম গোমরায় –
ব্যস্ততার ভেঁপু, অসহিষ্ণু পথিকের আস্ফালন,
বস্তির গলি থেকে ভেসে আসা খিস্তিতে।
এই শহরে আজ বসন্ত এসেছে।
ফুলের আড়তদার বেলির বদলে
গাঁদার ঝুড়ি নামায়,
রঙ জ্বলে যাওয়া হলুদ পাঞ্জাবীর
এক বালক মালা কেনে
সদ্য কৈশোরের প্রথম শাড়ি পরা
কোনও বালিকার জন্য।
চৈত্রের রোদে শাহবাগের রাস্তায়
দ্বিগুণ দামে কুলফি কেনে ভীরু প্রেমিক,
ঘামে ভিজে রিকশা খোঁজে মরিয়া হয়ে।
এই শহরে আজ বসন্ত এসেছে।
আমি বরং অপেক্ষায় থাকি আগামী বর্ষার,
হাঁটু জলে ডুবে যাবে মিরপুর থেকে পল্টন,
হুড-তোলা রিকশায় জড়সড় প্রেম,
ধূসর ধুলো ঝেড়ে ফুটপাথের মৃতপ্রায় ঝাউঝোপ আবার সতেজ,
জানালার কার্নিশে চুপসানো চড়ুই
আর অজানা গলি থেকে কদমের উন্মাদ গন্ধ।
শ্যাওলা ধরা ভাঙা দেয়ালে বসে
সেদিন আমি বরং দেখবো
বৃষ্টি স্নানে এই বেজন্মা শহরটাকেও
কেমন পবিত্র মনে হয়।
Leave a Reply